Wednesday, August 7, 2019

মারণ রোগের কাছে হার প্রেমিকার, শেষ ইচ্ছায় হাসপাতালেই সিঁদুর দান প্রেমিকের




HOWRAH TIMES :- মনের মানুষ টা  যেন একটি বার তাঁর সিঁথিটা রাঙিয়ে দেন ৷ এটাই ছিল ক্যান্সার আক্রান্ত প্রমিকার শেষ ইচ্ছা। আর মনের মানুষের সেই শেষ ইচ্ছাকে স্বীকৃতি দিতে  কসুর করেননি প্রেমিক সুব্রত ৷ দশ বছর ধরে তো এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলেন তিনি ৷ ভালোবাসার মানুষটার  কথা মতো, হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটেই তাকে  সিদুঁর পরিয়ে  বন্ধনে বেঁধে ফেলেন প্রেমিক। কথায় বলে সাত জন্মের বন্ধন, কিন্তু এক জন্যেই  আটকে রাখতে পারলেন কই !

সিঁদুর দানের মাত্র দু'ঘণ্টার মধ্যে সব বন্ধন ছিন্ন করে চলে গেলেন বীথি ৷  সদ্য যৌবনে পা রাখা দুটো মন নিজেদের মতো করে জীবন গড়ার স্বপ্ন দেখছিলেন ৷ কিন্তু, হঠাৎ একটা খবর সব কিছুকে এলোমেলো করে দিল ৷ জানা গেল, মনের মানুষটা জটিল কর্কট রোগে আক্রান্ত ৷

 শিলিগুড়ির ডাবগ্রামের বীথিকে দেখে ভালো লেগেছিল উত্তর দিনাজপুরের সুব্রত কুণ্ডুর ৷ সেই ভালোলাগা ভালোবাসায় পরিণত হতে খুব একটা সময় নেয়নি ৷ ঠিক যখন একসাথে  অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন দেখছিল দুজনে, তখনই সামনে আসে বীথির অসুখের কথা ৷ শুরু হয় চিকিৎসা ৷ মাথার চুল তো আগেই গেছিল পরে  বাদ দিতে হয় একটি হাতও। তবে এতকিছুর পরেও একটি বারের জন্য মনের মানুষটার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখেননি পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী সুব্রত ৷ পাশে থেকেছেন, সাহস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ৷ হাতে হাত ধরে বলেছিলেন লড়াই করার কথা৷ চিকিৎসার প্রয়োজনে কখনও মুম্বই, কখনই শিলিগুড়ি যেতে হয়েছিল বীথিকে ৷

কখনই বীথিকে সঙ্গ ছাড়া করেননি সুব্রত ৷ প্রথমে না জানলেও ততদিনে সুব্রতর পরিচয় জানা হয়ে গেছে বীথির পরিবারের সকলের ৷

 চিকিৎসকরাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন ৷ তখনই মুখফুটে শেষ ইচ্ছায় কথাটা বলেছিলেন বীথি ৷ মেয়ের সেই ইচ্ছাকেই মর্যাদা দেন তাঁর বাবা-মা ৷ আয়োজন করা হয় বিয়ের ৷ বীথির নাকে তখন অক্সিজেন মাস্ক। সিঁদুর দানের পর হাসপাতালের বেডে সুব্রতর সঙ্গে বীথি । তবে স্বপ্ন পূরণের কিছু মুহূর্ত পড়েই বিছানায় ঢলে পড়েন বীথি ৷ তখনও একটা হাত সুব্রতর হাতে ধরা ৷ শরীরটা আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয় পড়তে থাকে৷ চিকিৎসকরা শেষ চেষ্টা শুরু করার আগেই সব শেষ ৷ চোখের সামনেই বীথিকে শেষ বিদায় দিলেন সুব্রত৷

সিনেমা বা গল্পের মতো মনে হলেও এ কাহিনী রিয়েল লাইফের। ভালোবাসা অসহায় তবু ভরসার নরম চাদরে ,পরিচিত হাতের আদরে বেঁচে থাকে সে আর এক বুক ভালোবাসা নিয়ে দূরে বহুদূরে কেউ গেয়ে ওঠে-  'কেন‌ এরকম কিছু হলো না, কেউ কাউকে ছুঁতে পেল না--'

No comments:

Post a Comment

হাওড়া শ্যামপুরে বাছরী যুব সংঘে মা সাজবেন রেশমী সুতোর সাজে

অর্পণ দাস:  হাওড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শ্যামপুর থানার বাছরী গ্রামের "বাছরী যুব সংঘের" সার্বজনীন দুর্গোৎসবের এবছর ৫৩ তম বর্ষ । বিগত...