রণতোষ মুখোপাধ্যায়:- আচমকা দেখলে বোঝার উপায় নেই অপারেশন থিয়েটার নাকি গানবাজনার রিহার্সাল রুম! অস্ত্রোপচার চলাকালীন রোগী গলা ছেড়ে গান ধরেছেন! 'ওটি' বলতেই মানুষের মনে যে সিরিয়াস একটা ব্যাপার চলে আসে সেই চিরাচরিত ছবিটা এখানে উধাও। 'এখানে' বলতে বিদেশ নয়, খাস কলকাতায় বাগুইহাটির একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে এলেই আপনি দেখবেন এই ছবিটাই যেখানে অস্ত্রোপচারের সময় রোগীকে ফুল বডি অ্যানেসথেসিয়া না করে শুধু অস্ত্রোপচারের জায়গাটুকু অবশ করেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। এতে খরচের পাশাপাশি কমছে অপারেশন পরবর্তী জটিলতাও। কিন্তু কিভাবে?
এই অসাধ্য সাধন করছেন ঐ বেসরকারি নার্সিংহোমের সহ- অধিকর্তা অর্থোপেডিক সার্জন ডা.সুমন্ত ঠাকুর।শল্য চিকিৎসার সাথে যিনি মিলিয়েছেন সুরের মায়াজাল। তাঁর এই সুর-শল্ চিকিৎসার জাদু এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। নির্বাচিত হল ' ইউআরএফ গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড ২০১৯'- এর জন্য।
ডা. সুমন্ত ঠাকুরের মতে, 'মিউজিক আমাদের শরীরে 'লিম্বিক সিস্টেম' কে প্রভাবিত করে। শরীরে এমন কিছু হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায় যাতে ব্যাথার প্রকোপ ও উদ্বেগ কমে।" তাঁর আরও পর্যবেক্ষণ, মিউজিক থেরাপি হওয়া রোগীর রক্তচাপ,নাড়ির স্পন্দন, হৃদস্পন্দন ''ফুল অ্যানেসথেসিয়া' হওয়া রোগীদের তুলনায় অনেক ভাল। পরীক্ষালব্ধ পর্যবেক্ষণ কে সম্প্রতি একটি সেমিনারেও তুলে ধরেন সুমন্ত।
সুর-তাল-ছন্দে মিলিয়ে যাবে যন্ত্রণা। কোন রোগে কেমন গানে মিলবে সেই সুরাহা? জানাচ্ছেন ফর্টিস হসপিটালের বিশিষ্ট সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. সঞ্জয় গর্গ। শুনলেন সুমিত রায়।
সুরমূর্ছনায় মিলছে যন্ত্রণার মুক্তি! ওষুধ, ডাক্তারবাবু, প্রিয় বন্ধুর পাশাপাশি একটা মিঠে সুরও প্রয়োজন নিমেষে জীবনকে আবার নতুন ছন্দে বেঁধে দিতে। এখানেই মিউজিক থেরাপির সার্থকতা আর সেই থেরাপিকেই ধন্বন্তরি প্রমাণ করেছেন ডা. সুমন্ত ঠাকুর।

No comments:
Post a Comment