News H Times ওয়েব ডেস্ক :- ইউপিএ সরকারের দ্বিতীয় দফায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১০ সালে মহিলাদের জন্য মাতৃভূমি লোকাল চালু করেছিলেন। সাধারণ যাত্রীদের কাছে যার পরিচিতি ‘লেডি়জ স্পেশ্যাল’ হিসেবে। কারণ শুরুর দিকে ওই সব ট্রেনে পুরুষ যাত্রীরা উঠতে পারতেন না।
কিন্তু পরবর্তীতে মাতৃভূমি লোকালে বেশ কিছু কামরা ফাঁকা যাচ্ছে, এই কারণ দেখিয়ে ওই ট্রেনগুলির মাঝের তিনটি কামরায় পুরুষদের ওঠার অধিকার দিয়েছিলেন রেল কর্তৃপক্ষ।
লোকসান কমাতে হাওড়া-ব্যান্ডেল ও হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় মাতৃভূমি লোকালের নির্দিষ্ট কামরায় পুরুষ যাত্রীদের ওঠার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। যদিও শিয়ালদহ ডিভিশনের সবকটি লেডিজ স্পেশালে এই নিয়ম চালু করতে গিয়েই বেধেছিল বিপত্তি। পুরুষ ও মহিলা যাত্রীদের বিক্ষোভে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল এই শাখার একাধিক স্টেশন। পরিস্থিতি আঁচ করে সেই সময় ঐ শাখায মাতৃভূমি লোকালে পুরুষ যাত্রী ওঠার অনুমতি দেওয়া থেকে সরে আসে রেল, যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। নিত্যযাত্রী পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে রীতিমতো বিভাজন সৃষ্টি হয়।অনেকে পিতৃভূমি লোকাল চালুর ও দাবি তোলেন।
হাওড়া-খড়গপুর শাখায় অফিস টাইমে মাতৃভূমি লোকালে প্রথম ও শেষ বগি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকলেও বাকি বগিগুলিতে পুরুষ যাত্রীরা উঠতে পারতেন।এই নিয়মেই এতদিন চলছিল এই ট্রেন।কিন্তু হঠাৎ করেই বিভিন্ন স্টেশনে অপেক্ষারত মহিলা নিত্যযাত্রীরা এই ট্রেনে তাদের জন্য সংরক্ষিত প্রথম বা শেষ কামরায় উঠে দেখছেন আগে থেকেই সমস্ত আসন দখল করে বসে আছেন পুরুষ যাত্রীরা। যদিও রেলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও স্টেশনেই বা বিবৃতিতে জানানো হয়নি যে মাতৃভূমি লোকালে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরা তুলে দেওয়া হয়েছে।
তাহলে কিসের ভিত্তিতে মহিলাদের কামরায় পুরুষ যাত্রীরা!
এই ট্রেনেরই নিত্যযাত্রী তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী প্রিয়াঙ্কা দে'র অভিযোগ, 'আমরা মহিলা নিত্যযাত্রীরা একসপ্তাহ ধরে এই সমস্যার সন্মুখীন হচ্ছি।
মহিলা কামরায় আগে সবসময় আরপিএফ থাকলেও আশ্চর্য্যজনক ভাবে এখন আর তাদের দেখা যাচ্ছে না।আমি নিজে আন্দুলে রেল পুলিশে অভিযোগ জানাতে গেলেও তারা কোন রকম সহযোগিতা করেননি।এমনকি সাঁতরাগাছি স্টেশনে কর্তব্যরত আরপিএফ দের বিষয়টি জানালে তারা আমাকে অফিসে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলে। আমি লিখিত অভিযোগ জানাব দেখি রেল তারপর কি ব্যবস্থা নেয়'।
প্রিয়াঙ্কার মতো অনেক মহিলা নিত্যযাত্রীদেরই একই জিজ্ঞাসা,যখন সমস্ত লোকাল ট্রেনেই মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরা রয়েছে তখন হঠাৎ করে মাতৃভূমি লোকালে তা উঠিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে কাদের মদতে! কেউ কেউ এর মধ্যে রাজনীতির গন্ধও খুঁজে পাচ্ছেন। যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ট্রেন চালু করেছিলেন,লোকসভা ভোটের ফলাফল প্রকাশের ঠিক পরপরই এই ঘটনা আবারও পুরনো বিতর্ক সামনে এসেছে,তবে কি 'লেডিস স্পেশাল' ট্রেন তুলে নেওয়া হবে ?
ঘটনা যে দিকেই গড়াক,যে কোন ও লোকাল ট্রেনেই মহিলা কামরা রাখা বাধ্যতামূলক ,তাই মাতৃভূমি
লোকালের ক্ষেত্রে রেলের অবস্থান স্পষ্ট করে জানতে চাইছেন এই ট্রেনে প্রতিদিনের সওয়ার মহিলা যাত্রীরা।






No comments:
Post a Comment