রণতোষ মুখোপাধ্যায়:-ঢিমে আঁচে বসানো মিশমিশে কালো এক বৃহৎ বপু লোহার কড়াই এ ৬ কেজি দুধ।এই দুধ একঘন্টা ধরে জাল দিয়ে তৈরি হবে ২কেজি রাবড়ি। কড়াইয়ের মাথায় চলছে হাত পাখার বাতাস।কড়াইয়ের দুধে পুরু সরের আস্তরণ পড়ছে এই পাখার বাতাস। বিশেষভাবে ছেঁচে বানানো বাঁশের পাতলা কঞ্চি দিয়ে সেই সরের চাদর সযত্নে লেপে দেওয়া হচ্ছে কড়াইয়ের গায়ে।
কি ভাবছেন,এটা আবার কিসের রেসিপি? এ হল সেই অমৃত যা কিনা রসরাজ শিবরাম চক্রবর্তী কুলকুচি করে ফেলে দিতেন,তবে পেটের ভেতরে। রাবড়ি।কলকাতায় খাটাল উচ্ছেদের পর হাওড়া র এক গ্রাম ই এখন সেই আমৃতসুধা রাবড়ি র অন্যতম আউটসোর্সিং।
হাওড়া জেলার গাংপুর।জগৎবল্লভপুর থেকে বড়গাছিয়া সকালবাজার পেরিয়ে বাঁ দিকের রাস্তা ধরে এগোলে প্রথমে পড়বে পার্বতীপুর গ্রাম।এই পার্বতীপুরের ও নাম ভারতজোড়া। প্রতিমার মাথার কেশ বা চুলের যোগান দেয় হাওড়া র এই গ্রাম।এই পার্বতীপুরের ঠিক পরের গ্রাম ই গাংপূর। স্থানীয় মানুষের কাছে যা 'বালতি গ্রাম ' নামে বেশি পরিচিত।এই গ্রামে পা দিলেই আপনি তের পাবেন দুধ জাল দেবার মিষ্টি গন্ধ।
গ্রামের ৩৫-৪০ঘর অসামান্য কারিগর সারাদিন মেহনত করে বাঁচিয়ে রাখছেন মিষ্টান্ন শিল্পের এই অসামান্য শৈলী।বাড়ির মহিলারাও এই মেহনতের শরিক।এভাবেই সারাদিন অন্ততঃ আট বার দুধ জাল দিয়ে তৈরি হচ্ছে রাবড়ি। কড়াইয়ের গায়ের সরের সেই আস্তরণ ঠান্ডা ও শক্ত হলে নিপুণ হাতে তাকে চৌকো করে কেটে মিশিয়ে দেওয়া হয় অবশিষ্ট ঘন দুধে। তারপর হাওড়া র এই বালতি গ্রাম থেকে জন্ম নেওয়া সেই অমৃত সুধা অলি গলি ঘুরে পৌঁছে যায় কোনও না কোনও মিষ্টিপ্রেমীর পাকস্থলী তে।



Where is the location? Provide the google map.location
ReplyDelete