Tuesday, May 7, 2019

২৩এ কি বদলাতে ‌‌‌‌‌‌চলেছে‌ হাওড়ার রাজনৈতিক রং!

 টিম NHT:- পঞ্চম দফার ভোট পঞ্চমীতে উত্তেজনা প্রবণ কেন্দ্র  হিসেবে ব্যারাকপুরে সকলের নজর থাকলেও দিনের শেষে হাওড়া এবং ব্যারাকপুর মিলে গেল একজায়গায় ,দুজায়গতেই প্রার্থী  নিজেই রক্তাক্ত হলেন। এই খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই নেটিজেনরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে।একদল এই ঘটনায় সিআরপিএফ এর  নিন্দা করলেও অপর অংশ জওয়ানদের প্রশংসা করে তাদের সমর্থন জানান।অনেকেই   প্রসুনবাবুর এক সিভিক পুলিশ কে চড় মারার পুরনো ঘটনাকে মনে করিয়ে দিয়ে লেখেন, এতদিনে সেই সিভিক পুলিশ শান্তি পেলেন।

সকাল সাতটায় ভোট শুরু হবার পর থেকেই হাওড়া র বিভিন্ন বুথ থেকে একের পর এক ইভিএম বিকল হয়ে যাবার খবর আসতে শুরু করে। কোথাও এক ঘন্টা কোথাও দ-ুআড়াই ঘন্টা বন্ধ থাকে ভোটদান পর্ব। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আমতা, উদায়নারায়নপুরের কিছু জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে।উদয়নারায়ণপুরের করণপুরে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পোড়ানো হয় বাইক।
হাওড়া শিবপুর ফোরসর রোডে একটি বুথের বাইরে প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলরের স্বামীকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে।আবার বেলুড়ে বুথের মধ্যে বিজেপি সমর্থকের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন  প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর পল্টু বণিকের বেলুড় বয়েজ স্কুলের ৮২ নং বুথে।সব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ছিল 'ঠুঁটো জগন্নাথ'।এমনকি সাঁকরাইলের বাণীপুরে একটি উর্দু হাই স্কুলের বুথে ভোটারদের তাড়িয়ে দেবার অভিযোগ ওঠার পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা ছিল নিরব দর্শকের।তবে শেষ মুহূর্তে তারা সক্রিয় হলেন এবং এতটাই হলেন হাওড়ার প্রার্থী থেকে তার আপ্ত সহায়্ক দুজনকেই ফেলে পেটালেন তারা। হাওড়ার রাজনৈতিক ইতিহাসের মুকুটে জুড়ল এক নতুন পালক।


গতকালের হাওড়া লোকসভা নির্বাচনে আমাদের বুথ ফেরত সমীক্ষা যা বলছে তাতে গত দু বারের সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবারের   লড়াইটা বেশ  কঠিন হতে চলেছে।  গতবারের  মার্জিন ধরে রাখা তো দূর অনেক বুথে লিড পাবেন বিজেপি র রন্তিদেব। এর পরোক্ষ  কারণ জনমানসে   প্রসূন বাবুর  ইমেজ আর আগের মত না থাকা।  নারদায় তার জড়িয়ে পড়াকে হাওড়ার ভোটাররা ভাল ভাবে নেননি তেমন ই রাজনৈতিক প্রচারে মোহনবাগানের সবুজ মেরুনকে ব্যবহার করা ভোটারদের বিরূপ করেছে। এছাড়াও কিছু কিছু  ওয়ার্ডে  তৃণমূল কংগ্রেসের নিচের তলার  নেতৃত্ব ও কর্মীরা  তলে তলে বিপদে ফেলতে চলেছেন দলকে।   ২০১৪ সাল পর্যন্ত  তৃণমূল নেতৃত্ব ও কর্মীরা  অনেক সংযত ছিলেন। কিন্তু  গত কয়েক বছরে তাদের মধ্যে  অনেক পরিবর্তন এসেছে। যা জনগণ দেখছেন,বুঝছেন ও।সেই সুবাদে  ভোটারদের মধ্যে যেমন  ক্ষোভ জন্মেছে তেমনই   কিছু চোরা স্রোত যা পুরনো তৃণমূল কর্মীদের মধ্যেও সঞ্চারিত হয়েছে।  কিছু কিছু ওয়ার্ডে  সেই ক্ষোভ এতটাই  চরম আকার নিয়েছে সেখানে এখন 'বিজেমূল' অবস্থা। ১,১৩,১৪,১৫ ও ৪০ নং ওয়ার্ড সেরকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বামেদের একটা বড় অংশের ভোট গতকাল গেছে গেরুয়া শিবিরে।যা হাওড়ার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তাছাড়া প্রতিদিন তৃণমূলের জনপ্রিয়তা একটু একটু করে কমছে। ট্রেনে বাসে আলোচনায় কান পাতলেই সেটা টের পাওয়া যায়।হয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সেটা বুঝেছেন  আর বুঝেছেন বলেই তাকে একের পর এক জনসভায় দৌড়ে আসতে হচ্ছে, পদযাত্রায় পা মেলাতে হচ্ছে, মানুষের কাছে দিতে হচ্ছে উন্নয়নের ফিরিস্তি। সাত আট বছর পরে ও বোঝাতে হচ্ছে, আমি তোমাদেরই লোক।
বালি এবং মধ্য হাওড়ার ভোটে (হাওড়া শিবপুরে ভোট দানের  হার  সবচেয়ে বেশি) হয়ত প্রসূন বন্দোপাধ্যায় রক্ষা পাবেন এযাত্রায় তবে রন্তিদেবের নিঃশ্বাসটা তার ঘাড়েই পড়বে , বেশি দূরে নয়।




No comments:

Post a Comment

হাওড়া শ্যামপুরে বাছরী যুব সংঘে মা সাজবেন রেশমী সুতোর সাজে

অর্পণ দাস:  হাওড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শ্যামপুর থানার বাছরী গ্রামের "বাছরী যুব সংঘের" সার্বজনীন দুর্গোৎসবের এবছর ৫৩ তম বর্ষ । বিগত...