Sunday, May 5, 2019

উইক-এন্ড ডেস্টিনেশনে নয়নাভিরাম বাকসি


অতনু মল্লিক:-    পিকনিকের ভরা বাজার অথবা অফ সিজনেও যারা ফ্যামিলি বন্ধু বান্ধব নিয়ে নিরিবিলিতে একটু কোয়ালিটি টাইম কাটাতে চান চলে আসুন বাকসি। বারো মাসে রুপনারায়নের বারো রুপ। রুপনারায়ন মুন্ডেশ্বরী ও দামোদরের পাস খালের মিলনস্থল বাকসি। মুল ধারার দু কিলোমিটার দক্ষিণে মানকুর ঘাটের উল্টোদিকে মেদিনীপুরকে উত্তর দক্ষিণে (খাতায় কলমে পূর্ব পশ্চিমে) আড়াআড়ি ভাগ করে কংসাবতীর শাখা নদী মিশেছে রুপনারায়নে।
বাকসি নিয়ে আগেও লিখেছি। আজ আরো কিছু ইনফরমেশন যোগ করছি।
গতমাসে সোমদেবদা যখন বলল চল কোথাও পিকনিক করে আসি, আমি প্রথমেই বাকসি সাজেষ্ট করলাম। কারন নদীর ধারে শান্তনুদা সুন্দর একটা পিকনিক স্পট বানিয়েছে, আমি একবার যায়গাটা দেখেও এসেছি। বেশ কয়েকটি পিকনিকের আয়োজনও করেছে। অফিসের কাজে বেশ কয়েকবার বাতিল করার পর ১৯শে জানুয়ারি দিন ঠিক হল। সকালে উঠে সোমদেবদাকে ফোন করলাম,  ওরা দুটি বোলেরোতো ১৫ জন বেরিয়ে কোনা এক্সপ্রেস ওয়েতে। ধুলাগড়ে অম্লানদাকে তুলে আসবে। আমি স্নান করে শান্তনুদাকে ফোন করলাম। শান্তনুদা বলল আজ কোনভাবেই থাকতে পারছি না, অফিস যেতেই হবে। তোরা চলে যা, সব ব্যবস্থা করা আছে।
ব্রেকফাস্ট করে বাকসি জিরো পয়েন্টে ওদের জন্য অপেক্ষা করতে করতে ব্রিগেড মুখী গাড়ি গুনছি ওরা এসে হাজির হল। ওদের গাড়িতে চড়ে দশ মিনিটে শান্তনুদার ভি পার্ক। দেদার হইহুল্লোড় খাওয়া-দাওয়া করে চারটের সময় ওদের বিদায় জানিয়ে বাড়ি ফিরলাম।

                           বাকসি ইটভাটা

বাকসি ভি পার্কে পিকনিকের জন্য যোগাযোগ করুন শান্তনুদার সাথে। গুগলে বাকসি ভি পার্ক সার্চ করলে ছবি ও নাম্বার পেয়ে যাবেন। খুব নমিনাল রেটে পার হেড বেসিসে কমপ্লিট প্যাকেজ। ব্রেকফাস্ট থেকে লাঞ্চ সাথে যথেষ্ট পরিমাণে চিকেন ও ভেজ পাকোড়া। রেটটা আমাদের জন্য স্পেশাল ছিল, তাই আর বললাম না।
নিজের গাড়িতে এলে তো বাকসি ইটভাটা থেকে বামদিকে বেঁকে ত্রিবেনী সিনেমা হল পেরিয়ে সোজা স্পটে। আর পাবলিক টার্ন্সপোর্টে এলে সাউথ ইস্টার্নে যে কোনও লোকালে( উলুবেড়িয়ার লোকাল বাদে) বাগনান স্টেশনে নামুন। বাগনান বাসস্ট্যান্ড থেকে বাকসিগামী ছোট গাড়িতে বাকসি ইটভাটা স্টপেজে নামুন। ওখান থেকে হেঁটে ৫ মিনিটে নদীর ধারে সাজানো গোছানো পাঁচিল ঘেরা দুটি টালির ঘর, পুরুষ ও মহিলা শৌচাগার ও অনেকটা খোলা যায়গা সহ ভি পার্ক। তবে রুটের গাড়িগুলো গাদাগাদি করে লোক তোলে, তাই পারলে পুরো গাড়িটাই বুক করে নেবেন। গাছের ছায়ায় চেয়ার পেতে বসে নদীর জোয়ার ভাটা ও নৌকার আনাগোনা দেখতে দেখতে কখন যে সূর্য দেব নদীর জলে রক্তিম আভা ছড়িয়ে পশ্চিমে ঢলে পড়বে খেয়ালই থাকবে না। চাইলে নৌকাবিহারও করতে পারেন। খরচ বাঁচাতে চাইলে ফেরী নৌকায় ওপারে হাওড়ার চিতনান দ্বীপ ও মেদিনীপুরের দুধকোমরা হাট ঘুরে আসতে পারেন। বুধবার ও রবিবার এলে উপরি পাওনা বাকসির হাট।
                           দাতাবাবার আশ্রম
                       রূপনারায়ণ ও মুন্ডেশ্বরীর সঙ্গম

শীতে প্রচুর টাটকা সবজি ও মনোহারি পন্যের সম্ভার নিয়ে গ্রামীন হাটের বিকিকিনি চলে। ফেরার পথে সামতাবেড়িয়ায় শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি দেখে  দেউলটি থেকেও ট্রেন ধরতে পারেন। পরিবার বন্ধু-বান্ধব অথবা অফিস কলিগদের সাথে একবার ঘুরে যেতেই পারেন একদিনের কমপ্লিট উইকএন্ড ডেষ্টিনেশন বাকসি।
এই এলাকায় প্লাস্টিক ও থার্মোকল ব্যাবহার করা ও জোরে ডিজে বাজিয়ে পিকনিক নিষিদ্ধ। বাকসিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে নিয়মিত পরিদর্শন হয়। তাই এগুলি এড়িয়ে চলবেন।

No comments:

Post a Comment

হাওড়া শ্যামপুরে বাছরী যুব সংঘে মা সাজবেন রেশমী সুতোর সাজে

অর্পণ দাস:  হাওড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শ্যামপুর থানার বাছরী গ্রামের "বাছরী যুব সংঘের" সার্বজনীন দুর্গোৎসবের এবছর ৫৩ তম বর্ষ । বিগত...