Sunday, April 7, 2019

ইতিহাসে এবং শরবতে বাঙালিকে মজিয়ে রেখেছে প্যারামাউন্ট

রণতোষ মুখোাধ্যায়:-শরবতের দোকান তাও আবার শতাব্দী প্রাচীন! এই একশো বছর ধরে শুধু শরবতে মজিয়ে রাখা নয়,একশো বছর ধরে বাংলার এক অজানা  ইতিহাস- ঐতিহ্য কে বাঁচিয়ে রাখার নাম পেরামৌন্ট।
বরিশালের কাঁচাবেড়িয়া গ্রামে ছিল নীরাঞ্জন মজুমদারের বাড়ি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সৈনিক, বরিশাল অনুশীলন সমিতির সদস্য। ১৯১৮ সালে নীহাররঞ্জন মজুমদার কলকাতা এসে এই প্রতিষ্ঠানের সূচনা করেন, তখন এর নাম ছিল প্যারাডাইস। কিন্তু শরবত বিক্রি তাঁর প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল না। শরবতকে সামনে রেখে দোকানের পিছনে চলত স্বদেশী কাজ কর্ম।কে না আসতেন এখানে! বিপ্লবী সতীন সেন, বাঘাযতীন থেকে শুরু করে 
এখানে এসেছেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুও।  এক গ্লাস শরবতের আড়ালে গুপ্ত সমিতির কাজ। কিন্তু ব্রিটিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এই গোপন অনুশীলন কেন্দ্র একদিন ধরা পড়ে গেল। পুলিশ এসে বন্ধ করে দিল শরবতের দোকান। অনেকগুলো বছর বন্ধ হয়ে পরে থাকার পর  ১৯৩৭ এ ফের  খুলল দোকান । এবার  ‘প্যারাডাইস’এর নাম বদলে রাখা হল প্যারামাউন্ট।
বল বীর, বল উন্নত মম শির’-এর বিদ্রোহী  কবি যেমন  এখানে নিয়মিত আসতেন শরবতের টানে তেমনই  সত্যজিৎ রায় থেকে উত্তম কুমার,সুচিত্রা সেন -প্যারামাউন্টের শরবতের সমঝদারের তালিকাটা ওখানেই বেশ বড়।ডাবের শরবত , যা এই দোকানের বিশেষ সর্বতগুলির মধ্যে অন্যতম - সেই  শরবতের রেসিপি যাঁর দেওয়া তাঁর নাম আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় !
আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় নীহাররঞ্জন মজুমদারকে বলেছিলেন কীভাবে ডাবের শাঁস মিশিয়ে শরবতে আনতে হবে নতুন স্বাদ। সেই ভারতীয় বিজ্ঞানীর রেসিপিতেই  একশো বছর ধরে  নট আউট।
এখানকার উল্লেখযোগ্য শরবত হচ্ছেকোকো মালাই, ম্যাঙ্গো ম্যানিয়া, পাইনঅ্যাপেল মালাই, ডাব শরবত, ক্রিমরোজ, লিচুর শরবত, খাস সিরাপ, লেমন সিরাপ, গ্রিন ম্যাঙ্গো, আঙুর শরবত ইত্যাদি।
শরবতের কত বৈচিত্র্য হতে পারে ত প্যারামাউন্টে না এলে জানা সম্ভব নয়।তাই এই দহন দিনে শুধু গলা ভেজাতে নয়,ইতিহাস কে একবার ছুয়ে দেখতেও যেতে পারেন প্যারামাউন্টে।

No comments:

Post a Comment

হাওড়া শ্যামপুরে বাছরী যুব সংঘে মা সাজবেন রেশমী সুতোর সাজে

অর্পণ দাস:  হাওড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শ্যামপুর থানার বাছরী গ্রামের "বাছরী যুব সংঘের" সার্বজনীন দুর্গোৎসবের এবছর ৫৩ তম বর্ষ । বিগত...