Wednesday, August 7, 2019

পানিপথের চতুর্থ যুদ্ধে সাঁতরাগাছি আন্ডারপাসে আপনাদের স্বাগত !


রণতোষ মুখোপাধ্যায়:- বছর বদলায় কিন্তু সাঁতরাগাছি আন্ডারপাসের জল যন্ত্রনার ছবিটা বদলায় না। নামেই টার্মিনাল  স্টেশন কিন্তু স্টেশন থেকে বের হলেই জলযন্ত্রণা। গোটা আন্ডারপাস ও বাস স্ট্যান্ড জুড়ে হাঁটু জল। আন্ডারপাসের একপাশের পাথরের স্ল্যাব দিয়ে সন্তর্পণে চলছে যাতায়াত। আন্ডারপাসে ঢোকার আগে লম্বা লাইন।
নিম্নচাপ বা বর্ষার কালো মেঘ দেখলেই ঐ পথে যাতায়াতকারী  ঘরপোড়া গরুরা থুড়ি নিত্যযাত্রীরা যেমন ভয় পান তেমনই স্থানীয় রিক্সা বা ভ্যান চালকেরা অপেক্ষা করেন ঝোপ বুঝে কোপ মারার এই  মওকার।  জলপারাপারের জন্য সেবা দিতে এ সময় তারা  তৎপর থাকেন ঠিকই  কিন্তু সেবা নিতে ওই সামান্য পথ পেরোতে অসহায় যাত্রীদের দিতে হয়  কড়কড়ে ৫০ বা ১০০টি টাকা। বর্ষার সময়ে বা কিছুক্ষনের বৃষ্টির পরে  দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখার সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের আন্ডারপাসে এটিই নিত্যনৈমিত্তিক ছবি।
           (গতকাল সন্ধ্যায় আন্ডারপাসের জলছবি)

দ্বিতীয় হুগলি সেতু তৈরি হওয়ার পরে ক্রমেই গুরুত্ব বেড়ে চলেছে সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনের। বেশিরভাগ দূরপাল্লার ট্রেন এই স্টেশনে থামে। এখান থেকে বেশ কিছু দূরপাল্লার ট্রেন ছাড়েও। সাঁতরাগাছি স্টেশনের পাশেই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। এই রাস্তার এক দিক চলে গিয়েছে আন্দুলের দিকে। অন্য দিকে, দ্বিতীয় হুগলি সেতু হয়ে কলকাতার রবীন্দ্রসদনে যাওয়া যায়। এই রাস্তা দিয়ে নবান্ন, ধর্মতলা, হাওড়ার মন্দিরতলা, ডুমুরজলা স্টেডিয়াম এবং হাওড়া জেলা হাসপাতালে যাওয়া যায়।

রেল স্টেশনের ছ’নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরিয়ে কিছুটা এগিয়েই কোনা এক্সপ্রেসওয়ে। এটি একমুখী রাস্তা। আন্ডারপাসের পাশের সিঁড়ি দিয়ে রাস্তায় উঠে সহজেই ধূলাগড়,আমতা,বাগনান  শহরতলির বাস ধরা যায়। কিন্তু কলকাতা, হাওড়া বা নবান্নে যেতে গেলে আন্ডারপাস দিয়ে যাওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই। সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনে আসতে হলেও এই আন্ডারপাসই ব্যবহার করতে হয়। অথচ বর্ষার সময় প্রায় প্রতি দিনই আন্ডারপাসে জল জমে থাকে। প্রতি দিন হাজার হাজার যাত্রী এই পথ ব্যবহার করেন।


বাসিন্দাদের অভিযোগ এলাকার খাল এবং নিকাশীর সংস্কার না হওয়াতেই ফি বছরের এই দুর্ভোগ। বর্ষার রোজনামচা। সাঁতরাগাছিতে রেল লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সেই কারণে বর্ষায় যে জল জমবে তার আগাম সঙ্কেত রেলকে দিয়েছিল হাওড়া পুরনিগম।কিন্তু তারপরেও কাজ হয়নি।

শুধু সাঁতরাগাছিই নয়। গোটা হাওড়া শহরেই বর্ষার
একই  জলছবি। হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ড - মধ্য হাওড়া,শিবপুর,দক্ষিণ হাওড়া, লিলুয়া,বেলুড়, উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ড জলে ভাসার অপেক্ষায়।

সাঁতরাগাছি আন্ডারপাসের জল যন্ত্রনার এই পুরাতন রোগের দায় পুরসভা ঠেলে রেলের দিকে, রেল ঠেলে‌ হাওড়া পুরসভার দিকে। আর এই দায় ঠেলাঠেলির চক্রবুহে পড়ে অভিমন্যু নিত্যযাত্রীরা  সার বুঝে নিয়েছেন , এর থেকে মুক্তি নেই শুধু যুদ্ধ আছে, চতুর্থ পানিপথের‌ যুদ্ধ।

ছবি:- অর্পন দাস। মধুমিতা বেরা।

No comments:

Post a Comment

হাওড়া শ্যামপুরে বাছরী যুব সংঘে মা সাজবেন রেশমী সুতোর সাজে

অর্পণ দাস:  হাওড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শ্যামপুর থানার বাছরী গ্রামের "বাছরী যুব সংঘের" সার্বজনীন দুর্গোৎসবের এবছর ৫৩ তম বর্ষ । বিগত...