পৃথ্বীশরাজ কুন্তী: রাস্তার দু'ধারে সাদা ফুলের সুদৃশ্য ছোটো ছোটো গাছগুলো স্কুলের পথে পড়ুয়াদের চোখ এড়ায়না ।আপাতদৃষ্টিতে সুন্দর মনে হলেও তা 'সুন্দর' নয় বরং ভীষণভাবে ভয়ংকর।শ্যামপুর-২ ব্লকের নাওদা নয়নচন্দ্র বিদ্যাপীঠের পড়ুয়াদের কাছে সর্বপ্রথম 'পার্থেনিয়াম' নামক এই বিষাক্ত উদ্ভিদের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তুলে ধরেন ঐপথেই আসা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।কেবল শিক্ষার্থীদের কাছে এই গাছের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেই থেমে থাকেননি তাঁরা।হাতে হাত মিলিয়ে বিদ্যালয়ের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের নিয়ে টিফিন বিরতিতে বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার পাশে হয়ে থাকা 'পার্থেনিয়াম' উচ্ছেদ অভিযানে নেমে পড়লেন শিক্ষিক-শিক্ষিকারা।২০-২২ জন ছাত্রকে নিয়ে ৪ জন শিক্ষিক-শিক্ষিকা এই উদ্যোগে সামিল হন।
অন্যতম উদ্যোক্তা শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের ইংরাজি বিভাগের শিক্ষিকা সুচন্দ্রিমা সেনগুপ্ত জানান,বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসারে ছাত্রছাত্রীরা মুখে মাস্ক ও গ্লাভস পরে এই অভিযানে নামে।তারপর গাছের গোড়ায় নুন জলদিয়ে 'পার্থেনিয়াম' নিধনে সামিল হয়।এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে ৫ কেজি নুন।শুধু নিধন করাই নয়,সেইসময়ে পথচলতি মানুষকে এই গাছ চিনিয়ে দিয়ে এর অপকারিতা সম্পর্কে সচেতন করেন শিক্ষার্থীরা।আবার টিফিন বিরতির নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ফিরে আসেন পড়ুয়া ও শিক্ষিক-শিক্ষিকারা।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ড.সৌরভ দোয়ারী জানান,পার্থেনিয়ামের মূল থেকে আলিলো নামক একধরনের রাসায়নিক পদার্থ ক্ষরিত হয় যা অন্য গাছকে জন্মাতে দেয়না।ফলে উক্ত স্থানের বাস্ততন্ত্র যেমন বিঘ্নিত হয় তেমনই এই উদ্ভিদের পরাগরেণু বাতাসের মধ্যে ভেসে বেড়িয়ে হাঁপানিসহ মানব ফুসফুসের একাধিক রোগের সৃষ্টি করে।এই উদ্ভিদের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ আমেরিকায় হলেও গম আমদানির মাধ্যমে এই উদ্ভিদের আগমন ঘটে ভারত,নেপাল,বাংলাদেশসহ এশিয়ার একাধিক দেশে।পার্থেনিয়াম চেনানো ও তার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার বিভিন্ন চেষ্টা হলেও তা যথেষ্ট নয়।বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অরুণাভ বাজানি জানান,স্থানীয় পঞ্চায়েতে পার্থেনিয়াম সম্পর্কে উদ্যোগ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।আগামী দিনেও তাঁরা পার্থেনিয়াম নিধনে পথে নামবেন ও স্থানীয় মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হবেন।



No comments:
Post a Comment