পৃথ্বীশরাজ কুন্তী: জলের অপর নাম জীবন।রুক্ষ্ম-শুষ্ক মরুদেশে এক ফোঁটা জলের জন্য হাহাকার এ অনেকেরই পরিচিত দৃশ্য।কিন্তু,বেশ কয়েকদিন আগেই মিডিয়া জুড়ে শোরগোল পড়েছিল এক হাড়হিম করা খবরে।ঔরঙ্গাবাদের দ্বিতীয় শ্রেণীরর একটি বালককে পানীয় জল আনতে প্রতিদিন বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে দীর্ঘ প্রায় ১২ কিমি. পথ পাড়ি দিতে হয়।নাহ এ কোনো বিস্ময়কর কাহিনি নয়,বরং সমাজের কাছে বৃহত্তর সাবধান বাণী।এই খবর সচেতন সমাজকে কোথাও যেন নাড়িয়ে দিয়ে যায়।অতঃপর, জলের অপচয় রোধ করতে সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।সমাজের অগ্রগতির অগ্রদূত ছাত্রছাত্রীরা।তাই তাদের মধ্যে সর্বাগ্রে সচেতনতার বীজ বপন করা প্রয়োজন।সচেতনতার সাথে দরকার বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ।আর তা থেকেই আমতা-১ ব্লকের সোনামুই হরিসভা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উৎসারিত হল এক অভিনব ভাবনা।
পূর্বেই এই বিদ্যালয় ছাদে কিচেন গার্ডেন কিমবা বিদ্যালয়ে জন্মদিন পালনের ন্যায় বিভিন্ন অভিনব প্রয়াসের কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে।তাদের নবতম সংযোজন অতি স্বল্প ব্যয়ে 'Waste water treatment'।বিদ্যালয় কর্ত্তৃপক্ষ সূত্রে খবর,বিদ্যালয়ের ছাদের কিচেন গার্ডেন,ফুলের বাগানে জল দেওয়ার জন্য ও মিড-ডে-মিলের বাসনপত্র পরিষ্কার করার উদ্দেশ্যে কিছুদিন আগেই পাতকূয়া খনন করা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যালয়ের ছাদে জমা বৃষ্টির জল,বেসিনের জল ও রান্নার বাসন ধোওয়ার জল মাটির নীচে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে প্রবেশের ব্যবস্থা করানো হয়েছে।এই জল নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুযায়ী পুনরায় বিশুদ্ধ হয়ে পাতকূয়ায় প্রবেশ করবে।এই অভিনব ভাবনার হোতা তথা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অরুণ খাঁ জানান,এই পদ্ধতির ফলে মাত্র ২০ ফুটের গভীর পাতকূয়ায় সারা বছরের জলের জোগানও পাওয়া যাবে।এই সমস্ত ছোটো ছোটো ভাবনার মধ্য দিয়ে পড়ুয়াদের মধ্যে সর্বোপরি সমাজের কাছে জল অপচয় সম্পর্কে বার্তা তুলে ধরতে তাঁরা সচেষ্ট।তার সাথে সাথে তাঁরা চান মানুষ জানুক ব্যবহার করা জলকে কীভাবে পুনরায় ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যায়।সমগ্র প্রকল্পটির জন্য খরচ হয়েছে ১২০০-১৫০০ টাকা।ব্যবহৃত হয়েছে বড়ো আকারের ড্রাম।বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ড.সৌরভ দোয়ারী এই অভিনব উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে জানান, জল অপচয় রোধ করে তা পুর্নব্যবহারে এই উদ্যোগ শুধু একটি বিদ্যালয়েই নয় সমস্ত বিদ্যালয়েই চালু হোক।
শিপ্রা,রূপম,শুভশ্রীদের ন্যায় এযুগের তরুণতম প্রজন্মের পড়ুয়াদের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে হবে বাঁচুক পরিবেশ,বাঁচুক জীবকূল,আগামী হয়ে উঠুক প্রাণময়।
No comments:
Post a Comment