Thursday, April 25, 2019

আইনের হাত যখন সংবাদমাধ্যমের কলার ধরে


  রণতোষ মুখোপাধ্যায়:-  খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের হেনস্থার শিকার হতে হয় মাঝেমধ্যেই।পাড়ার গুন্ডা বা রাজনৈতিক দাদাদের থেকেই সচরাচর এই ধরনের ব্যবহার আমরা পেয়ে থাকি।কিন্তু তার জন্যে কর্মবিরতি পালন করিনা পরেরদিন। ওই বড়জোর  কালোব্যাজ পরে মৌন মিছিল আর প্রেস ক্লাবের লিখিত বিবৃতিতেতেই সব শেষ।কারণ আমরা অসংগঠিত শ্রমিক। আমাদের কোনও সংগঠন নেই আর মারধর খাওয়াটা তো  আমাদের প্রফেশনাল হ্যাজার্ড।
গতকালের ঘটনায় সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনাটা একটু অভিনব এই কারণেই ,আঘাতটা এসেছে আইনজীবীদের থেকে।বলা ভালো , আইন নিজেই নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছে।
গতকালের ঘটনায় এক  সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের  প্রতিনিধি আহত হয়েছেন তাই হোক প্রতিবাদ গোছের ভাবনা বা নিন্দার ঝড় একটু বেশিই বইছে সোশ্যালমিডিয়ায়। জেলার কোনও সাপ্তাহিক বা পাক্ষিক সংবাদপত্রের কোনও অখ্যাত সাংবাদিক এই ঘটনার শিকার হলে সে খবর বোকাবাক্সে বন্দী থাকে তার আর খবর হয়ে ওঠা হয় না।
গতকাল আইনজীবীদের উপর পুলিশের নির্মম লাঠি চালানোয় তীব্র প্রতিবাদ জানাই। বিশেষত কয়েকজন যেভাবে মাথায় আঘাত পেয়েছেন তাতে বিপদ হতে পারত।আপনাদের ওপর সহানুভূতি রেখেই বলি,

আপনাদের কথা অনুযায়ী ,পুরসভা পার্কিং থেকে বেআইনি পয়সা তুলছে।এই বেআইনি কাজের জন্য আইনি পথেও তো যাওয়া যেত।
একজন বা দুজন আইনজীবি যদি পুর কর্মী দের সাথে বচসা বা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে তাহলে বাকিরা তাদেরকে নিরস্ত করে থানায় যাওয়া যেত।পারস্পরিক ইট ছোঁড়াছুঁড়ি র কি খুব প্রয়োজন ছিল।
একটা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা থমকে গেল,আটকে রইল স্কুল ফেরত বাচ্চারা, অ্যাম্বুল্যান্স। আহত হলেন পথচলতি সাধারন মানুষ।

 ইঁটের আঘাতে মাথা ফেটেছিল এক মহিলা পুরকর্মীর।তাকে হাওড়া হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গেলে অ্যাম্বুল্যান্স থেকে ছিনিয়ে নেবার চেষ্টা হয়। হাওড়া জেলা হাসপাতালের গেট বন্ধ করে রাখতে হয় এই কারণে। হয়ত কোনো মুমূর্ষু রোগীও ওই সময় ঢুকতে না পেরে বিপদে পড়েছিলেন।

পুলিশের লাঠি চালনা যেমন সমর্থনযোগ্য নয় তেমনই আইন নিয়ে পড়াশোনা করা মানুষদের নিজের হাতে আইন তুলে নেবার এই অপরিণত কার্যকলাপ ও সমর্থনযোগ্য নয়।
এতে আইন ব্যবস্থার গরিমা এবং আইনজীবীদের ওপর সাধারণ মানুষের ভরসা কোথাও  আহত হয়।
আইন আইনের পথে চলে ঠিকই কিন্তু দু একজনের ব্যাক্তিগত স্বার্থে আইন কোলে  উঠে পরলেই বিপদ।আমি আইনজীবি মানেই যা খুশি করতে পারি এই ভাবনাটাই তো ভয়ঙ্কর।পুলিশ অন্যায় করেছে,পুর  কর্মীরা দোষ   করেছে  এটা যেমন ঠিক তেমনি এটাও ঠিক - দোষ করেছেন আপনারাও।কিন্তু নিজেদের দোষ টা না দেখে  কর্ম বিরতি পালনের মধ্যে দিয়ে সহানুভূতি আদায়ের এই  পথ কি একটা সিস্টেম কে চাপে রাখার চেষ্টা?
আইনের চোখ না হয়  বাঁধা কিন্তু আপনারাও যদি অন্ধ হয়ে যান----

No comments:

Post a Comment

হাওড়া শ্যামপুরে বাছরী যুব সংঘে মা সাজবেন রেশমী সুতোর সাজে

অর্পণ দাস:  হাওড়া গ্রামীণ অঞ্চলের শ্যামপুর থানার বাছরী গ্রামের "বাছরী যুব সংঘের" সার্বজনীন দুর্গোৎসবের এবছর ৫৩ তম বর্ষ । বিগত...